বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে আগামীকাল সোমবার থেকে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকানপাট, বিপণি-বিতান, মার্কেট বন্ধ রাখা থাকবে। তবে দোকানে, বিপনি-বিতানে ক্রেতা থাকলে আধাঘণ্টা পর্যন্ত ক্রেতাদের কেনাকাটার সুযোগ দেওয়া যাবে। এছাড়াও কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান, রেস্তোরাঁ, সিনেমা বা থিয়েটার খোলা রাখা যাবে। রোববার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, ঢাকা চেম্বারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী মালিক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে রাত ৮টার পরে সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে এ নির্দেশনা সারা দেশের উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে এবং এটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন। এই প্রস্তাব সার-সংক্ষেপ আকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এর আগে গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের স্বাক্ষর করা চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে পদক্ষপে গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১১৪ ধারার বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালন করে সারা দেশে রাত ৮টার পর দোকান শপিংমল মার্কেট বিপণীবিতান ইত্যাদি খোলা না রাখার বিষয়টি যথাযথভাবে নিশ্চত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো। শ্রম আইন অনুযায়ী কোন কোন প্রতিষ্ঠান এই নির্দেশনার বাহিরে থাকবে তা তুলে ধরেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. এহছানে এলাহী।
মুদি দোকানের ক্ষেত্রে কি হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সচিব মো. এহছানে এলাহী বলেন, আইনে যেসব প্রতিষ্ঠান নির্দেশনার বাইরে থাকবে বলা হয়েছে, তার বাইরে সব ধরনের দোকান বন্ধ থাকবে। সে ক্ষেত্রে মুদি দোকানও রাত ৮টার পর বন্ধ থাকবে। তবে কেনা-কাটার জন্য দোকানে ক্রেতা থাকলে আধাঘণ্টা পর্যন্ত ক্রেতাকে কেনাকাটার সুযোগ দেওয়া যাবে।
শ্রম আইন অনুযায়ী যেসব প্রতিষ্ঠান রাত ৮টার পর খোলা রাখা যাবে সেগুলো হচ্ছে- ডক, জেটি, স্টেশন অথনা বিমান বন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস; তরি-তরকারি, মাংস, মাছ, দুগ্ধ জাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান; ওষুধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান; দাফন ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান; তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার (হালকা) নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান; খুচরা, পেট্রোল বিক্রির জন্য পেট্রোল পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটর গাড়ির সার্ভিস স্টেশন; নাপিত এবং কেশ প্রসাধনীর দোকান; যেকোনো ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা; যেকোনো শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি আলো-অথবা পানি সরবরাহ করে এবং ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার।